মেহেদী ব্যবহার করলে লাল রং হয় কেন?

প্রাচীনকাল থেকেই রুপচর্চায় মেহেদী ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাকৃতিক রঞ্জকপদার্থ হিসেবে এর জুড়ি মেলা কঠিন। মেহেদী পাতায় রয়েছে লসোন (Lawsone) নামক রঞ্জক পদার্থ। লসোনের রাসায়নিক সংকেত C10H6O3। লসোনকে Hennotannic Acid নামেও ডাকা হয়। মুলত এই Lawsone এর কারনেই মেহেদী পাতার পেস্ট শরীরে লাগালে লাল রঙ হয়।

আর মেহেদী পাতায় এই হেনোট্যানিক এসিড বা লসোনের উপস্থিতির কারণে যুগ যুগ ধরে শরীর রাঙ্গাতে মেহেদী পাতার এত কদর রয়েছে। যদিও এটি এসিডিক, তার পর ও যদি মেহেদী পাতা বেটে নেবার পর এতে কমলা/লেবুর রসের মতো অম্লীয় উপাদান মেশালে পাতা থেকে বেশি Lawsone অণু বের হয় যার ফলে রং ভালো হয়।

মেহেদি পাতা থেকে গুড়া মেহেদি তৈরীর নিয়ম
মেহেদি পাতা থেকে গুড়া মেহেদি তৈরীর নিয়ম

কিভাবে এই Lawsone কাজ করে?

ত্বকে মেহেদী লাগানোর পর সেখান থেকে লসোন অণু ত্বকে আস্তে আস্তে প্রবেশ করে। মজার বিষয় হলো লসোন অণু ত্বকের যে অংশে মেহেদী লাগানো হয় ঠিক সেই অংশের কোষেই সীমাবদ্ধ থাকে এবং আশে পাশের কোষে ছড়িয়ে পড়েনা। ফলে মানুষের শরীরে মেহেদী দিয়ে ইচ্ছামতো ডিজাইন করা যায়।

আবার এই অণুগুলো চারপাশের কোষে না ছড়ালেও লম্বালম্বি ত্বকের উপরের স্তর থেকে ক্রমশ গভীরে যেতে থাকে। উপরের দিকের কোষে স্বাভাবিক ভাবেই বেশি লসোন অণু প্রবেশ করে তাই উপরের দিকে ডিজাইনটি বেশি রঙিন দেখায়। অণুগুলো যতটা গভীরে যায় মেহেদীর রংও তত বেশিদিন স্থায়ী হয়। আমাদের ত্বকের কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর মরে যায় ও মৃত কোষ গুলো ঝরে পরে নতুন কোষগুলো ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। তাই মেহেদীর রংও শুরুতে গাঢ় থাকলেও ধীরেধীরে হাল্কা হয়ে যায়।

ত্বকে মেহেদী যত দীর্ঘ সময় দিয়ে রাখা হয়, লসোন অণুগুলো ততসময় ধরে ত্বকে প্রবেশ করে ও আরো গভীরে যায়। তাই ভালো রঙ পেতে দীর্ঘসময় মেহেদী দিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও পুরু বা মোটা ত্বকে চিকন বা পাতলা ত্বকের তুলনায় কোষস্তর বেশি থাকে, ফলে অধিক পরিমাণ কোষে মেহেদীর অণুগুলো প্রবেশ করতে পারে ও তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী রং ও পাওয়া যায়।

নতুন নতুন মেহেদি ডিজাইন পেতে এই পোস্ট গুলি দেখুনঃ

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.