মেহেদী ডিজাইন ২৪

মেহেদি পাতা থেকে তৈরী পেস্ট বিবাহে সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধির ও সুন্দর্যের প্রতীক ভাবা হয়। এটি মূলত নববধুর হাত বা পা সোনালী রঙ্গে রাঙ্গাতে ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু সংস্কৃতিতে মানা হয় মেহেদির দাগ শরীরে যত গাঢ় হবে হবে দুই ব্যক্তির মধ্যে প্রেম তত গভীর হবে। মেহেদির নকশা ট্যাটুর মত স্থায়ী হয় না এটি শরীরে ক্ষণস্থায়ী, কারণ ট্যাটুর কালি ত্বকে ছিদ্র করে সারা জীবনের জন্য বসে যায়, অন্যদিকে মেহেদি হল একটি অস্থায়ী রঞ্জক যা ত্বকের উপরিভাগে বসে এবং ৩ সপ্তাহের মধ্যে বিলিন হয়ে যায়।

সভ্যতার ইতিহাস ধরা হয় ৫ হাজার বছরের। তবে মেহেদির ইতিহাস তার চেয়েও পুরনো। মেহেদির প্রথম ব্যবহার উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলে নিওলিথিক (১০০০০-৪০০০ খ্রিস্ট পূর্ব) থেকে শুরু হয়। প্রায় ৯ হাজার বছর আগে, মরুভূমির বাসিন্দারা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে মেহেদির পেস্ট দিয়ে তাদের পা ঢেকে রাখতেন। এটি যোদ্ধাদের মধ্যে বিশেষভাবে প্রচলিত ছিল।

চিত্রকলা বিশেষজ্ঞ মার্কিন অধ্যাপক ড. মেরিলিন সিভিটানিকের মতে, পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মেহেদি আরব বিশ্বে সৌভাগ্য, স্বাস্থ্য এবং কামুকতার প্রতীক।

তদুপরি, মেহেদি প্রায় ৩ হাজার বছর ধরে দক্ষিণ চীনে প্রাচীন দেবী সংস্কৃতির সময় থেকে প্রেমের আচারের সাথে ব্যাপক ভাবে জড়িত।

প্রাচীন মিশরের রানী নেফারতিতি (১৩৭০-১৩৩০ খ্রী.পূর্ব ) এবং রানী ক্লিওপেট্রা (৬৯-৩০ খ্রী.পূর্ব ) নিয়মিত মেহেদি ব্যবহার করতেন। মিশরের পিরামিডে ফারাওদের মমিতে হেনা ব্যবহার করা হতো। মধ্যযুগের কিছু চিত্রকর্মে (ছবিতে) রাজা সলোমনকে রাণীর সেবারত আবস্থায় মেহেদি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

ভারতের অজন্তা গুহাচিত্রেও শরীর সজ্জায় মেহেদির ব্যবহার দেখানো হয়েছে। ১২ শত খ্রিস্টাব্দ থেকে উপমহাদেশে মেহেদির ব্যবহার শুরু হয় এবং মুঘল আমলে প্রাকৃতিক প্রসাধনী হিসাবে মেহেদির ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠে। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মোমতাজকে মিশরের রাজা রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে মেহেদি ও মেহেদির চারা দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

মুসলিম মহিলারা ১৫ শত বছরেরও বেশি সময় ধরে মেহেদি ব্যবহার করে আসছেন। নবী (সাঃ) মুসলিম মহিলাদের হাতে মেহেন্দি ডিজাইন করতে উত্সাহিত করেছিলেন। নবী (সাঃ) কন্যা ফাতিমা (রা) নিয়মিত হাতে মেহেন্দি ডিজাইন করতেন। নবীজি (সাঃ) নিজেই দাড়িতে মেহেদি ব্যবহার করতেন। ইসলামী খেলাফতের সময় থেকেই মুসলিম বিশ্বে মেহেদি ব্যবহার একটি ধর্মীয় রীতিতে পরিণত হয়।

মুসলিম মহিলারা ১৫ শত বছরেরও বেশি সময় ধরে মেহেদি ব্যবহার করে আসছেন। নবী (সাঃ) মুসলিম মহিলাদের হাতে মেহেন্দি ডিজাইন করতে উত্সাহিত করেছিলেন। নবী (সাঃ) কন্যা ফাতিমা (রা) নিয়মিত হাতে মেহেন্দি ডিজাইন করতেন। নবীজি (সাঃ) নিজেই দাড়িতে মেহেদি ব্যবহার করতেন। ইসলামী খেলাফতের সময় থেকেই মুসলিম বিশ্বে মেহেদি ব্যবহার একটি ধর্মীয় রীতিতে পরিণত হয়।

অন্য দিকে 

ভারতের অজন্তা গুহাচিত্রেও শরীর সজ্জায় মেহেদির ব্যবহার দেখানো হয়েছে। ১২ শত বছর থেকে উপমহাদেশে মেহেদির ব্যবহার শুরু হয় এবং মুঘল আমলে প্রাকৃতিক প্রসাধনী হিসাবে মেহেদির ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠে। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মোমতাজকে মিশরের রাজা রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে মেহেদি ও মেহেদির চারা দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

মেহেদী ব্যবহারে যে রং আমরা শরীরে দেখতে পাই এর জন্য দায়ী হলো মেহেদীতে উপস্থিত একটি জৈব যৌগ-লসোন (lawsone)। এই লসোন (lawsone) প্রোটিনের সাথে বন্ধন গঠন করতে পারে। প্রাথমিক ভাবে এই লসোন (lawsone)মেহেদী পাতায় সঞ্চিত রয়েছে। তবে এটি পাতা থেকে নিষ্কাশিত না হলে কোনো রং সৃষ্টি করতে পারে না। লঘু এসিডের সাথে (যেমনঃ সাইট্রিক এসিড বা এডিপিক এসিড) মেহেদী পাতার পেস্ট তৈরি করা হলে লসোন (lawsone) নিষ্কাশিত হয় (এছাড়া গাছ থেকে পাতা নিয়ে পানির সাথে পেস্ট করলেও নিষ্কাশিত হয়)।এরপর পেস্টকে ত্বকে লাগানো হলে এটি ত্বকের প্রোটিনের সাথে বন্ধন গঠন করে রং সৃষ্টি করে।

প্রাচীন মিশরের রানী নেফারতিতি (১৩৭০-১৩৩০ খ্রী.পূর্ব ) এবং রানী ক্লিওপেট্রা (৬৯-৩০ খ্রী.পূর্ব ) নিয়মিত মেহেদি ব্যবহার করতেন। মিশরের পিরামিডে ফারাওদের মমিতে হেনা ব্যবহার করা হতো। মধ্যযুগের কিছু চিত্রকর্মে (ছবিতে) রাজা সলোমনকে রাণীর সেবারত আবস্থায় মেহেদি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

চিত্রকলা বিশেষজ্ঞ মার্কিন অধ্যাপক ড. মেরিলিন সিভিটানিকের মতে, পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মেহেদি আরব বিশ্বে সৌভাগ্য, স্বাস্থ্য এবং কামুকতার প্রতীক।

বিয়ের একদিন আগে এই মেহেদি ব্যবহার বা পড়া নাচ এবং গানের সাথে উদযাপিত হয়। নববধূর পাশাপাশি পরিবারের সকল মহিলারা হাতে ও পায়ে মেহেদি লাগান। শুধু কনে নয়, বরকেও মেহেদি লাগাতে দেখা যায়। কিছু কিছু সংস্কৃতিতে বলা হয়ে থাকে, মেহেদির রং যত গাঢ় হয়, বিবাহিত জীবন তত সুখী হয়। অর্থাৎ মেহেদি বর ও কনের মধ্যে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে কাজ করে।

মেহেদী পাতায় রয়েছে লসোন (Lawsone) নামক রঞ্জক পদার্থ। লসোনের রাসায়নিক সংকেত C10H6O3। লসোনকে Hennotannic Acid নামেও ডাকা হয়। মুলত এই Lawsone এর কারনেই মেহেদী পাতার পেস্ট শরীরে লাগালে লাল রঙ হয়। বিস্তারিত দেখুন- মেহেদী ব্যবহার করলে লাল রং হয় কেন?